01955533859, 01955533869 sleepcenterbd@gmail.com

রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ ভয় পাওয়া বা অস্বস্তিকর অনুভূতি অনেকেরই পরিচিত সমস্যা। এটি কেবল ঘুমের গুণমান নষ্ট করে না, বরং দৈনন্দিন জীবনেও প্রভাব ফেলে। এই সমস্যার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন শারীরিক, মানসিক বা পরিবেশগত বিষয়। এই নিবন্ধে আমরা জানবো, কেন ঘুমের মধ্যে হঠাৎ ভয় লাগে এবং এর সমাধানে কী কী করা যায়।

কেন ঘুমের মধ্যে হঠাৎ ভয় লাগে?

১. স্লিপ প্যারালাইসিস বা দমবন্ধ অনুভূতি

স্লিপ প্যারালাইসিস হলো এমন একটি অবস্থা, যখন ঘুমের মধ্যে বা ঘুম থেকে ওঠার সময় শরীর সাময়িকভাবে প্যারালাইজড হয়ে যায়। এ সময় মনে হতে পারে যেন কেউ বুকে চেপে ধরেছে বা শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এটি প্রায়ই ভীতিকর হ্যালুসিনেশনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, যা ভয়ের অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়।
সমাধান: নিয়মিত ঘুমের রুটিন মেনে চলা, স্ট্রেস কমানো এবং পাশ ফিরে ঘুমানো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

২. দুঃস্বপ্ন বা খারাপ স্বপ্নের প্রভাব

দুঃস্বপ্ন বা নাইটমেয়ার হঠাৎ ভয়ের একটি বড় কারণ। এটি সাধারণত মানসিক চাপ, ট্রমা বা উদ্বেগের কারণে হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়, তবে প্রাপ্তবয়স্করাও এর শিকার হতে পারেন।
সমাধান: দুঃস্বপ্ন কমাতে ঘুমের আগে রিল্যাক্সিং কার্যকলাপ, যেমন মেডিটেশন বা গল্পের বই পড়া, উপকারী হতে পারে।

৩. টেনশন ও স্ট্রেসের কারণে ভয়

দৈনন্দিন জীবনের চাপ, উদ্বেগ বা মানসিক অশান্তি ঘুমের মধ্যে ভয়ের অনুভূতি তৈরি করতে পারে। স্ট্রেস হরমোন (কর্টিসল) শরীরের “ফাইট অর ফ্লাইট” প্রতিক্রিয়াকে সক্রিয় করে, যা ঘুমের সময় অস্বস্তি সৃষ্টি করে।
সমাধান: যোগব্যায়াম, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

৪. অনিদ্রা ও ঘুমের ব্যাঘাত

অনিদ্রা বা ঘুমের ব্যাঘাতের কারণে শরীর ও মন পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না, যা রাতে ভয় বা উদ্বেগের অনুভূতি বাড়ায়। অনিয়মিত ঘুমের সময়সূচি এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সমাধান: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

৫. খাবার ও ক্যাফেইনের প্রভাব

ঘুমের আগে ভারী খাবার, ক্যাফেইন (চা, কফি, এনার্জি ড্রিঙ্ক) বা অ্যালকোহল গ্রহণ ঘুমের গুণমান নষ্ট করতে পারে। এটি রাতে অস্বস্তি বা ভয়ের অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
সমাধান: ঘুমের ৩-৪ ঘণ্টা আগে ক্যাফেইন বা ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। হালকা, স্বাস্থ্যকর খাবার খান।

৬. ঘুমের পরিবেশ (আলো, শব্দ, তাপমাত্রা)

অতিরিক্ত আলো, শব্দ বা অস্বস্তিকর তাপমাত্রা ঘুমের মধ্যে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, যা ভয় বা অস্বস্তির কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, হঠাৎ কোনো শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে ভয় লাগতে পারে।
সমাধান: ঘর অন্ধকার, শান্ত ও আরামদায়ক তাপমাত্রায় রাখুন। প্রয়োজনে ইয়ারপ্লাগ বা স্লিপ মাস্ক ব্যবহার করুন।

৭. ঘুমের আগে মোবাইল বা স্ক্রিন ব্যবহার

মোবাইল, ট্যাবলেট বা কম্পিউটারের স্ক্রিন থেকে নির্গত ব্লু লাইট মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়, যা ঘুমের জন্য জরুরি। এছাড়া, ভীতিকর কনটেন্ট বা উত্তেজনাপূর্ণ ভিডিও দেখা রাতে ভয়ের কারণ হতে পারে।
সমাধান: ঘুমের অন্তত ১-২ ঘণ্টা আগে স্ক্রিন ব্যবহার বন্ধ করুন এবং ব্লু লাইট ফিল্টার ব্যবহার করুন।

সহজ ঘরোয়া উপায়ে ভয় কমানো

  • নিয়মিত ঘুমের রুটিন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং সকালে উঠুন।
  • রিল্যাক্সেশন টেকনিক: ঘুমের আগে মেডিটেশন, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস বা হালকা স্ট্রেচিং করুন।
  • আরামদায়ক পরিবেশ: ঘরের তাপমাত্রা, আলো এবং শব্দ নিয়ন্ত্রণ করুন।
  • ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন: সন্ধ্যার পর ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।
  • মানসিক চাপ কমান: ডায়েরি লেখা বা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।
  • হালকা ব্যায়াম: দিনের বেলায় হালকা ব্যায়াম ঘুমের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করে।

কখন ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া জরুরি?

যদি ঘুমের মধ্যে ভয় পাওয়ার সমস্যা নিয়মিত হয় বা দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে, তবে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। স্লিপ অ্যাপনিয়া, নারকোলেপসি বা অন্য কোনো ঘুমের ব্যাধি থাকতে পারে, যা শুধুমাত্র চিকিৎসকই নির্ণয় করতে পারেন। ঢাকায় স্লিপ সেন্টারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ ধরনের সমস্যার জন্য উন্নত চিকিৎসা প্রদান করেন।

যোগাযোগ:

  • ইমেইল: sleepcenter@gmail.com
  • ফোন: +88 01955533859, +88 01955533869
  • ঠিকানা: ENT Care Center, SANMAR TOWER-2, 13th Floor, House-38/A, Road-35, Gulshan-2, Dhaka-1212, Bangladesh
  • খোলার সময়: শনি-বৃহস্পতি, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা

ঘুমের সমস্যা সমাধানে আজই পদক্ষেপ নিন এবং সুস্থ, শান্তিপূর্ণ ঘুম উপভোগ করুন!